আউট সোর্সিং।

আউটসোর্সিং স্বাধীন চলার পথে নতুন কর্মসংস্থানের দরজা । আউট সোর্সিং বর্তমান ও ভবিষ্যতের একটি বড় কর্মসংস্থানের মাধ্যম। আউটসোর্সিং আপনাকে শুধু আয় নয়, বরং স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা ও বিশ্ববাজারে কাজ করার সুযোগ দেবে। কারণ ছোট হয়ে আসছে পৃথিবী। সেই সাথে পাল্লাদিয়ে ছোট হয়ে যাচ্ছে চীরচায়িত কর্মসংস্থানের সূযোগ। তাই বলে কি জীবন থেমে যাবে? না প্রতিনিয়ত মানুষের সামনে বিকল্প কিছু আসেছেই। আপনি প্রস্তুত তো ? নাকি কি এখনো বিসিএস ক্যাডার হওয়ার অপেক্ষায় আছেন? কিংবা সরকারী চাকরীর জন্য দিনরাত গদবাঁধা কিছু প্রশ্ন মুখস্থ করতে ব্যস্ত আছেন। কিন্তু এত চাকরী কে দেবে ? আমাদের প্রায় ১৮ কোটির উপরে লোকসংখ্যার ছোট্ট এই দেশে কিভাবে হবে এত কর্ম সংস্থান? ভাবুন আর নিজকে তৈরি করুন। আজ এই ব্লগে আউটসোর্সিং নিয়ে আলাপ করবো আশাকরি সাথে থাকবেন। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন।।
আউটসোর্সিং কি?
সহজ কথায় আউটসোর্সিং বা ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে আপনি ঘরে বসে অন্যের কাজ করে দিবেন বা কাউকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিবেন। এতে আপনার প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত হাজিরা দিতে হবে না। মোট কথা এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে কোন কোম্পানি বা ব্যক্তি তার কাজ বা পরিষেবার কিছু অংশ বাইরের কাউকে দিরে করান। বাংলাদেশে এই খাতে কাজের সুযোগ অনেক এবং প্রতি বছর তা বাড়ছে। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে আউটসোর্সিংয়ের জন্য অন্যতম জনপ্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে আউটসোর্সিং একটি বড় সম্ভাবনার দরজা খুলে দিয়েছে। অনেক তরুণ-তরুণী আজ ফ্রিল্যান্সিং ও আউটসোর্সিং করে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠছেন।
ভিডিও এডিটিং ও মোশন গ্রাফিক্স: ভিজ্যুয়াল গল্প বলার শিল্প।
আপনি যদি ইলেকট্রনিক্স জিনিষের উপরে আগ্রহ থাকে তাহলেই চলবে। সামান্য কিছু ট্রেনিং নিয়ে আপনি এই সেক্টরে আউটসোর্সিং করতে পারেন। ক্রিয়েটিভ মন আর কারিগরি দক্ষতা থাকলে এই সেক্টরে আয় যেমন ভালো, তেমনি কাজের পরিসরও বিশাল। যারা গল্প বলতে ভালোবাসেন, ভিডিও এডিটিং হতে পারে তাদের জন্য পারফেক্ট পেশা। বর্তমানে ভিডিও কনটেন্টের চাহিদা আকাশচুম্বী। ইউটিউব, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম থেকে শুরু করে কর্পোরেট মার্কেটিং সব জায়গাতেই দরকার হয় পেশাদার ভিডিও এডিটর ও মোশন গ্রাফিক্স ডিজাইনারের।
এই কাজ করতে চাইলে Adobe Premiere Pro, After Effects, কিংবা DaVinci Resolve-এর মতো সফটওয়্যার জানা প্রয়োজন। ভিডিও কাটিং, ট্রানজিশন, কালার কারেকশন, অডিও ব্যালেন্সিং এবং মোশন টেক্সট বা এনিমেশন তৈরির মতো স্কিল থাকলেই আপনি এই খাতে কাজ করতে পারবেন। চলচ্চিত্র, ডকুমেন্টারি, ইউটিউব ভিডিও, প্রমোশনাল ক্লিপ, বিজ্ঞাপন—সবকিছুতেই ভালো ভিডিও এডিটরের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
গ্রাফিক ডিজাইন: সৃজনশীলতার দুনিয়া ।
গ্রাফিক ডিজাইন হচ্ছে এমন এক সৃজনশীল ক্ষেত্র । রঙ, ফন্ট, এবং আকারের মাধ্যমে তৈরি হয় দৃষ্টিনন্দন ও অর্থবহ ভিজ্যুয়াল কনটেন্ট। এই খাতে কাজের সুযোগ অফুরন্ত—লোগো ডিজাইন, ব্যানার, ফ্লায়ার, পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট, ব্র্যান্ডিং ইত্যাদি সবই এর অন্তর্ভুক্ত। আধুনিক ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে গ্রাফিক ডিজাইনারদের ভূমিকা এখন অনস্বীকার্য। আপনি যদি Adobe Photoshop, Illustrator, কিংবা Canva-এর মতো সফটওয়্যার ব্যবহার জানেন, তাহলে সহজেই এই ক্ষেত্রে কাজ শুরু করতে পারেন। মার্কেটপ্লেসে রয়েছে প্রচুর চাহিদা, এবং দক্ষ ডিজাইনারদের আয়ও হয় আকর্ষণীয় পরিমাণে। সৃজনশীলতা থাকলেই এখানে আপনার পথ উন্মুক্ত কাজেই আপনি চেষ্টা করতে পারেন।
কনটেন্ট রাইটিং: শব্দে গড়া সম্ভাবনার জগৎ।
ছন্দময় বাক্য তৈরি করে পাঠক বা শ্রোতাকে আকৃষ্ট করার নামই হলো কন্টেন্ট ক্রিয়েটর। ইন্টারনেটভিত্তিক যুগে “কনটেন্টই রাজা”এই বাক্যটি একেবারেই সত্য। ভালো কনটেন্ট মানেই বেশি ভিজিটর, ভালো ব্র্যান্ডিং এবং বিশ্বাসযোগ্যতা। আর এই প্রয়োজনেই তৈরি হয়েছে কনটেন্ট রাইটিং, ব্লগ রাইটিং ও কপিরাইটিংয়ের বিশাল কর্মজগৎ। যারা ভাষাগত দক্ষতা রাখেন এবং গবেষণাভিত্তিক লেখায় পারদর্শী, তারা ঘরে বসেই আয় করতে পারেন ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, বিজ্ঞাপন কিংবা প্রোডাক্ট ডিসক্রিপশন লেখার মাধ্যমে। ইংরেজি বা বাংলা – দুই ভাষাতেই রয়েছে চাহিদা।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে কনটেন্ট রাইটারের চাহিদা অনেক। SEO ফ্রেন্ডলি আর পাঠকবান্ধব কনটেন্ট তৈরি করতে পারলে নিয়মিত আয় নিশ্চিত করা সম্ভব। একটি ল্যাপটপ, ইন্টারনেট সংযোগ আর লেখার প্রতি ভালোবাসা থাকলেই আপনি গড়ে তুলতে পারেন আপনার কেরিয়ার—শুধু শব্দ দিয়ে।
ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট: ডিজিটাল দুনিয়ার কারিগর।
বর্তমান সময়ে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান, ছোট বা বড়, একটি পেশাদার ওয়েবসাইট চায়—নিজেকে অনলাইনে তুলে ধরতে। আর এখানেই ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের গুরুত্ব। ওয়েব ডিজাইনাররা মূলত ওয়েবসাইটের লুক ও ফিল তৈরি করেন, আর ডেভেলপাররা সেই ডিজাইনকে কার্যকর ওয়েবসাইটে রূপ দেন। আপনি যদি এই সেক্টরে কাজ করতে চান তাহলে শিখতে হবে HTML, CSS, JavaScript, WordPress, PHP, React.js ইত্যাদি। আর কোডিং এবং সমস্যা সমাধানে আগ্রহী হলে আপনার জন্য এটি আদর্শ ক্যারিয়ার।
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসে ওয়েবসাইট তৈরি, রিডিজাইন, স্পিড অপটিমাইজেশন বা কাস্টম ফিচার ডেভেলপমেন্টের মতো কাজের চাহিদা অনেক। একবার দক্ষতা অর্জন করলে ঘরে বসেই বিশ্বের যেকোনো ক্লায়েন্টের জন্য ওয়েবসাইট তৈরি করে উপার্জনের পথ খুলে যাবে। ডিজিটাল যুগে এটি একটি সময়োপযোগী ও লাভজনক স্কিল।
ওয়েব ডিজাইন ও ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: সোনালী ভবিষ্যত ।
বিশ্বে সাধারণ মানুষ থেকে প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটভিত্তিক বিশ্বে একটি আকর্ষণীয় ও কার্যকর ওয়েবসাইট চায়। যারফলে সৃষ্টি হয়েছে ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্টের চাহিদা। ওয়েব ডিজাইন মানে শুধু সৌন্দর্য নয়—এটা হলো ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা, নেভিগেশন, এবং কনটেন্ট উপস্থাপনার কৌশল। অন্যদিকে, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সেই ডিজাইনকে বাস্তব রূপ দেয়, যেখানে কোডিংয়ের জাদু চলে। এই সেক্টরে কাজ করার জন্য আমি উৎসাহিত করবো যারা কম্পিউটার সাইন্স নিয়ে লেখাপড়া করেছেন। ছাত্র কিংবা লেখাপড়া শেষ করা ব্যাক্তিটি ও অনায়েসে করতে পারেন এই কাজের উপর আউট সোর্সিং ।
মূলত এখানে HTML, CSS, JavaScript, WordPress, PHP, React.js-এর মতো টুলস জানা প্রয়োজন। দক্ষতা থাকলে আপনি বিভিন্ন ধরনের সাইট তৈরি করতে পারবেন—ব্যবসায়িক, ই-কমার্স, পোর্টফোলিও কিংবা ব্লগ। মার্কেটপ্লেসে ওয়েবসাইট তৈরি, কাস্টমাইজেশন, বাগ ফিক্সিং, বা স্পিড অপটিমাইজেশনের মতো কাজের প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
ওয়েব ডেভেলপমেন্ট এমন একটি ক্ষেত্র যা প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে, আর সেই সাথে বাড়ছে সম্ভাবনা।
ডিজিটাল মার্কেটিং: উদ্যেক্তাদের জন্য অনলাইনে ব্র্যান্ড গড়ার কারিগর।
ডিজিটাল মার্কেটিং হলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করে আপনার পণ্য ভোক্তার কাছে তুলে ধরার নাম । করোনাকালীন সময়ে এই বিষয়টি সবার নজর কেড়েছে। এর কাজ হলো পন্যের সঠিক অবস্থা নানা ঢঙে নানান বর্ননায় কাষ্টোমার কে আকৃষ্ট করা। যাতে ঘরে বসেই আপনার পন্য সম্পর্কে জানেন এবং ক্রয় করলে দ্রুত সময়ে পেয়ে যান। আজকের যুগে সফল ব্যবসার মূল কৌশল হচ্ছে সঠিকভাবে অনলাইনে নিজেকে তুলে ধরা। আর এই কাজটি করে ডিজিটাল মার্কেটিং। ফেসবুক মার্কেটিং, গুগল অ্যাডস, এসইও (Search Engine Optimization), ইমেইল মার্কেটিং, ইউটিউব মার্কেটিং ইত্যাদি এর গুরুত্বপূর্ণ শাখা। মূল কাজ হলো অনলাইন বিজ্ঞাপন, টার্গেট অডিয়েন্স বিশ্লেষণ, কনটেন্ট প্রমোশন এবং ব্র্যান্ড সচেতনতা। যারা ব্যবসা বাড়াতে চান, তারা এসব সেবা নিয়ে থাকেন। আপনি যদি সামান্য লেখাপড়া ও জানেন তাহলে অন্তত এই সেক্টরের কোন না কোন ভাবে জড়িত হতে পারেন। নিয়মিত প্র্যাকটিস, ট্রেন্ড বিশ্লেষণ ও কনভার্সন কৌশল রপ্ত করতে পারলে আপনি হয়ে উঠতে পারেন একজন সফল ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট।
ডেটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স: সহজ দক্ষতায় অনলাইন আয়।
আপনার বেসিক কম্পিউটার জ্ঞান এবং ইংরেজিতে টাইপিংয়ের গতি ভালো। তাহলে আপনি ডেটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্স হতে পারেন। আপনার জন্য সহজ ও বাস্তবসম্মত অনলাইন আয়ের পথ। ডেটা এন্ট্রি কাজের মধ্যে রয়েছে তথ্য কপি-পেস্ট, ফরম পূরণ, এক্সেল ডকুমেন্ট তৈরি ইত্যাদি। আর ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করলে ইমেইল ম্যানেজমেন্ট, ক্যালেন্ডার মেইনটেইন, ক্লায়েন্ট ফলোআপ, এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজে সহায়তা করতে হয়।
বিশ্বব্যাপী হাজারো ছোট-বড় উদ্যোক্তা ও কোম্পানি তাদের সময় বাঁচাতে ভার্চুয়াল সহকারীদের নিয়োগ দেন। বিশেষ কোনো উচ্চতর ডিগ্রি না থাকলেও মনোযোগ, সময়জ্ঞান, ও কমিউনিকেশন স্কিল থাকলেই এই সেক্টরে কাজ শুরু করা যায়। এটি অনলাইন ক্যারিয়ারের জন্য অন্যতম সহজ প্রবেশপথ। ঘরে বসেই এই কাজগুলো করা সম্ভব এবং আয়ও নির্ভরযোগ্য।
মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট: হাতের মুঠোয় বিশ্ব এবং আমাদের ভবিষ্যৎ।
আজ ধনী কিংবা গরিব, শহর কিংবা গ্রাম স্মার্টফোন মানুষের নিত্যসঙ্গী। সেই সঙ্গে বেড়েছে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের চাহিদা। এই চাহিদা পূরণে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপারদের ভূমিকা অপরিসীম। iOS ও Android প্ল্যাটফর্মের জন্য অ্যাপ তৈরি করে যে কেউ গড়ে তুলতে পারেন লাভজনক অনলাইন ক্যারিয়ার। এই ক্ষেত্রে কাজ করতে চাইলে শেখা প্রয়োজন Flutter, Kotlin, Java (Android-এর জন্য), এবং Swift (iOS-এর জন্য)। যারা প্রোগ্রামিং ভালোবাসেন এবং প্র্যাকটিক্যাল অ্যাপ তৈরি করতে চান, তাদের জন্য এই ক্ষেত্রটি আদর্শ।
ই-কমার্স অ্যাপ, শিক্ষা অ্যাপ, হেলথ অ্যাপ, গেমস বা কাস্টম টুল—সবকিছুর জন্য অ্যাপ ডেভেলপমেন্টের চাহিদা রয়েছে। মার্কেটপ্লেস ছাড়াও নিজস্ব অ্যাপ তৈরি করে প্লে স্টোর বা অ্যাপ স্টোরে প্রকাশের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। সৃজনশীলতা, প্রযুক্তি আর সমস্যা সমাধানের দক্ষতা থাকলে মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট হতে পারে আপনার জন্য ভবিষ্যতের সোনালী পথ।
ট্রান্সলেশন ও ট্রান্সক্রিপশন: ভাষাজ্ঞানকে পেশায় রূপান্তর।
আপনার ভাষাজ্ঞান ভালো থাকলে (বাংলা ও ইংরেজি) আপনি অনলাইন আয়ের দারুণ সুযোগ করতে পারেন। ট্রান্সলেশন (অনুবাদ) ও ট্রান্সক্রিপশন (শুনে লিখে নেওয়া)। এই কাজগুলোতে নির্ভুলভাবে তথ্য বোঝা ও উপস্থাপন করার দক্ষতা প্রয়োজন। ট্রান্সলেশন কাজে বই, ডকুমেন্ট, আর্টিকেল কিংবা ভিডিও স্ক্রিপ্ট এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় রূপান্তর করা হয়। অন্যদিকে, ট্রান্সক্রিপশন কাজে অডিও বা ভিডিও শুনে তা লিখিত রূপে তুলে ধরা হয়—যেমন ইন্টারভিউ, লেকচার বা পডকাস্ট। এই কাজগুলোতে টাইপিং দক্ষতা, ভালো শ্রবণশক্তি এবং বানান ও ব্যাকরণে পারদর্শিতা প্রয়োজন। Fiverr, Upwork, Rev-এর মতো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে এসব কাজের চাহিদা প্রচুর। ঘরে বসেই ভাষাজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আপনি গড়ে তুলতে পারেন এক স্থিতিশীল ও সম্মানজনক অনলাইন ক্যারিয়ার।
কিভাবে শুরু করবেন আউটসোর্সিং?
আপনি যে কাজটি ভালো জানেন তা হতে পারে গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, কনটেন্ট রাইটিং, ভিডিও এডিটিং । আপনি সে বিষয়ে আগে দক্ষ হোন কারন আপনি সারা বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের সাথে প্রতিযোগীতা করবেন। আউটসোর্সিং শুরু করতে প্রথম ধাপ হলো নিজেকে একটি নির্দিষ্ট স্কিলে দক্ষ করে তোলা। একটি ভালো স্কিল শিখে ফেললে একটি প্রফেশনাল পোর্টফোলিও তৈরি করুন, যেখানে আপনার কাজের নমুনা থাকবে। এরপর ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস যেমন Fiverr, Upwork, Freelancer, PeoplePerHour, বা স্থানীয় প্ল্যাটফর্মে প্রোফাইল তৈরি করুন।
শুরুতে ছোট ছোট প্রজেক্ট নিয়ে ক্লায়েন্টের আস্থা অর্জন করুন, সময়মতো কাজ জমা দিন, এবং পজিটিভ রিভিউ সংগ্রহ করুন। ধৈর্য ধরে কাজ করলে ধীরে ধীরে বড় প্রজেক্ট ও ভালো ইনকামের সুযোগ আসবে। প্রতিযোগিতামূলক এই জগতে টিকে থাকতে হলে দরকার হবে নিরবিচারে শেখা, আত্মবিশ্বাস, পেশাদার আচরণ এবং ভালো কমিউনিকেশন স্কিল।
কেন শুরু করবেন আউটসোর্সিং?:
বিশ্বে প্রতিনিয়ত লোক সংখ্যা বাড়ছে, সৃষ্টি হচ্ছে নতুন কর্মপন্থা কিন্তু সে সাথে অন্যান্য আনুষাঙিক বিষয় কি বাড়ানো যাচ্ছে? জবাব এমন টাই হবে না? বাধ্যতামূলক ৯-৫ চাকরির গণ্ডি কি আজীবন থাকবে? আপনি নিজেই আপনার সময়, ক্লায়েন্ট, ও কাজ বেছে নিতে পারেন। আয় নির্ভর করে দক্ষতার উপর—অর্থাৎ যত দক্ষতা, তত ইনকাম। বর্তমান বিশ্বে আউটসোর্সিং শুধু একটি আয়ের পথ নয়, বরং এটি স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা ও গ্লোবাল কাজের জগতে প্রবেশের চাবিকাঠি। আপনি যেকোনো স্থান থেকে, যেকোনো সময় কাজ করতে পারেন—চাই শুধু একটি স্কিল, ইন্টারনেট সংযোগ ও মনোযোগ। বাংলাদেশে হাজারো তরুণ-তরুণী আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছেন। এটি দেশের অর্থনীতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পড়াশোনার পাশাপাশি, চাকরির পাশাপাশি বা পুরোপুরি পেশা হিসেবেও আউটসোর্সিং হতে পারে এক অসাধারণ সিদ্ধান্ত। ভবিষ্যতের জন্য একটি টেকসই ও দক্ষতাভিত্তিক ক্যারিয়ার গড়তে আউটসোর্সিং এখন সময়ের দাবি।
আউটসোর্সিংয়ের নামে প্রতারণা: সাবধান না হলে ক্ষতির সম্ভাবনা!।
কথায় বলে সব সম্ভবের দেশ বাংলাদেশ। কিছু অসাধু ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই নাম ব্যবহার করে প্রতারণা করে থাকেন। কাজ শিখে ইনকাম করুন, কিংবা ১০০% ইনকামের গ্যারান্টি, প্রিমিয়াম একাউন্ট কিনলেই ডলার ইনকাম। এমন কি কাউকে দিয়ে বলাবেন আমি গত মাসে শুরু করে এ পর্যন্ত ৩০০০ হাজার কামিয়েছি। মনে রাখবেন, আপনি প্রতিযোগীতা করতে নামছেন সমগ্র পৃথিবীর মেধাবী লোকদের সাথে, কাজেই আপনাকে বুদ্ধি বিবেচনা করে অগ্রসর হতে হবে। অনেক ভুয়া ট্রেনিং সেন্টার অতিরিক্ত ফি নিয়ে কাজের গ্যারান্টি দেয়, অথচ পরে কোন কাজের সুযোগ দেয় না। আবার কিছু স্ক্যাম ওয়েবসাইট কাজের নামে ব্যক্তিগত তথ্য বা অর্থ হাতিয়ে নেয়। তাই আউটসোর্সিং শুরুর আগে বিশ্বস্ত সোর্স থেকে স্কিল শেখা, বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন এবং পরিচিত ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে কাজ করাই সবচেয়ে নিরাপদ। মনে রাখুন, সাফল্যের জন্য শর্টকাট নয়, প্রয়োজন সঠিক পথ, ধৈর্য আর কঠোর পরিশ্রম।
উপসংহার :
টাই বলবো যে, সাহস নিয়ে শুরু করুন। যে কোন বিষয়কে টার্গেট করে আপনি মাইন্ডসেট করুন, তারপর শুরু করুন। শিখতে থাকুন, এবং নিজের দক্ষতা দিয়ে জয় করুন বিশ্ব। বাংলাদেশে এর সম্ভাবনা বিশাল, শুধু প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা ও নিষ্ঠা। আপনি যদি আগ্রহী হন, তাহলে আজই একটি সিদ্ধান্ত নিন । আউটসোর্সিং বর্তমান ও ভবিষ্যতের একটি বড় কর্মসংস্থানের মাধ্যম। আপনি কি শুধুই চাকরির অপেক্ষায় থাকবেন, নাকি নিজের হাতেই নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলবেন? আউটসোর্সিং আপনাকে শুধু আয় নয়, বরং স্বাধীনতা, সৃজনশীলতা ও বিশ্ববাজারে কাজ করার সুযোগ দেবে।
লেখক : আবদুল আজিজ
কন্টেন্ট রাইটার